
গোমতী নদীর দুই তীরে চলছে অবৈধ মাটি কাটার উৎসব বাঁধ, সড়ক ও কৃষি হুমকির মুখে
আরমান হোসেন,নিজস্ব সাংবাদিক।।
কুমিল্লার গোমতী নদীর দুই পাড়জুড়ে চলছে অবৈধ মাটি কাটার ভয়াবহ তাণ্ডব। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রতিদিন শত শত ট্রাক নদীর বাঁধ ব্যবহার করে মাটি পরিবহন করছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করেই দীর্ঘদিন ধরে নির্বিঘ্নে এই অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেশীত মৌসুম শুরু হতেই গোমতী চরে যেন মাটি কাটার উৎসব শুরু হয়েছে। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে এই কার্যক্রম। প্রায় ৩ হাজার হেক্টর ফসলি জমিতে বছরে দেড় হাজার কোটি টাকার কৃষিপণ্য উৎপাদন হলেও, এখন সেই জমি কেটে নেওয়া হচ্ছে ইটভাটায় সরবরাহের জন্য। এতে কৃষিব্যবস্থা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, আগে এই জমিতে তারা সবজি চাষ করতেন। এখন অধিকাংশ জমিই কেটে নেওয়া হয়েছে। জমি না থাকায় চাষাবাদ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।বিবির বাজার ও গোলাবাড়ি সীমান্ত থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত প্রায় ৮৭টি পয়েন্ট থেকে প্রতিদিন ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ ট্রাক মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বুড়িচংয়ের এমরান ব্রিকসসহ জেলার বিভিন্ন বৈধ-অবৈধ ইটভাটায় এই মাটি সরবরাহ করা হচ্ছে।ভারী ট্রাক চলাচলে রাস্তাঘাট ভেঙে পড়ছে, ধুলাবালিতে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন স্থানীয়রা। স্থানীয়দের দাবি, প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা এই চক্রের সঙ্গে জড়িত। এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানজিনা জাহান বলেন, “অবৈধ মাটি কাটার বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে। তবে পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। একটি সমন্বিত কমিটি গঠনের মাধ্যমে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”তিনি আরও জানান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছেন এবং জড়িতদের অর্থদণ্ড দেওয়া হচ্ছে। গোমতী রক্ষায় প্রশাসনের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, কুমিল্লা সদর, মুরাদনগর, দেবিদ্বার, বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গোমতী নদীর চর থেকে মাটি কেটে ট্রাক্টর ও ট্রাকে করে বিক্রি করা হচ্ছে।স্থানীয়রা দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন, যাতে কুমিল্লা নগরসহ চারটি উপজেলা রক্ষা পায় এই পরিবেশ ও কৃষি বিপর্যয় থেকে।