চৌদ্দগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কৃষকের বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ।

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কৃষকের বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ।

প্রকাশিত: ১০:০৯ অপরাহ্ণ, জুন ১৮, ২০২৫

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কৃষকের বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ।

নিজস্ব প্রতিবেদন।।
কৃষকদের পুষ্টিবাগান তৈরির জন্য সরকার বিপুল অর্থ বরাদ্দ করলেও কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে সেই বরাদ্দের সিংহভাগই আত্মসাৎ করেছেন—এমন অভিযোগ উঠেছে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জোবায়ের আহমেদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ অনুযায়ী, প্রকল্প বাস্তবায়ন না করেই ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি করে তিনি লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করেন। সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থে নতুন ২৪১টি পুষ্টিবাগান তৈরির কথা থাকলেও প্রত্যেক কৃষককে বরাদ্দের তুলনায় অনেক কম সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এভাবে প্রায় ৩ লাখ ১৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া, পুরনো ৩৫০টি বাগান সংস্কারে কৃষকপ্রতি ৫ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও দেওয়া হয়েছে মাত্র ৫০০ টাকা করে, ফলে আত্মসাৎ হয়েছে আরও ১৫ লাখ টাকা।
শুধু পুষ্টিবাগান নয়, চলতি অর্থবছরে ১৫০০ কৃষকের জন্য বরাদ্দ করা ৪৮ লাখ ৩০ হাজার টাকার প্রণোদনার মধ্যে থেকেও একাধিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কৃষকপ্রতি নির্ধারিত সার ও বীজ না দিয়ে নিম্নমানের উপকরণ সরবরাহের মাধ্যমে জোবায়ের আহমেদ প্রায় ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৬ হাজার কৃষকের জন্য বরাদ্দকৃত ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার আমন ধান প্রণোদনার ক্ষেত্রেও নিম্নমানের বীজ কম দামে কিনে সরকারি দামের বিল উঠিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রাপ্ত অর্থের একটি বড় অংশ দিয়ে কৃষি কর্মকর্তা নিজের অফিসে ইন্টেরিয়র ডিজাইন ও দুই টন ক্ষমতাসম্পন্ন এসি স্থাপন করেছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে এ ধরনের ব্যয়ের কোনো বরাদ্দ নেই বলেও জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র। স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, অফিস থেকে মাঝে মাঝে সার-বীজ দেওয়া হলেও বরাদ্দের সঠিক পরিমাণ তাদের জানানো হয় না। অনেক ক্ষেত্রেই নিম্নমানের বীজ ও সার দেওয়ায় আশানুরূপ ফলন হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তারা।অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে কৃষি কর্মকর্তা জোবায়ের আহমেদ বলেন, ‘প্রতিটি বরাদ্দ ইউএনওর অনুমতি নিয়েই করা হয়েছে।’ তবে অফিসের সাজসজ্জা ও এসি কেনায় বরাদ্দ প্রসঙ্গে কোনো সদুত্তর না দিয়ে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জামাল হোসেন জানান, “আমি মাত্র সাড়ে ৩ মাস হলো এখানে যোগ দিয়েছি। এখন পর্যন্ত কোনো বিল আমি অনুমোদন করিনি। তবে অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।”এ বিষয়ে কুমিল্লা অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, “চৌদ্দগ্রামের অভিযোগের বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে দোষী প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”