হালিম সৈকত,(কুমিল্লা) তিতাস প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার তিতাসে ইটভাটা ভাড়া নিয়ে সরকারি লাইসেন্স নবায়ন ফি, বিদুৎ বিল, ৯ বছরের পরিবেশগত নবায়ন ফিসহ মালিক পক্ষকে বাৎসরিক ভাড়া প্রদানে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে জোরপূর্বক ইটভাটা দখলে রেখে বেআইনীভাবে ব্যবসা পরিচালনা করার অভিযোগ উঠেছে শফিউল হোসেন নামের এক ইটভাটার ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে।ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ভিটিকান্দি ইউনিয়নের দুলারামপুর গ্রামের মেসার্স মুজিবুর রহমান এম.এম.আর ব্রিকসে। ঘটনায় অভিযুক্ত ইটভাটার ভাড়াটিয়া শফিউল হোসেন কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা মরহুম সাহিদুল হকের ছেলে।
এদিকে ব্রিকস ফিল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে পরিবেশগত ছাড়পত্র নবায়ন ব্যতীত প্রতিষ্ঠান পরিচালনা না করার নির্দেশনা প্রদান করে নোটিশ দিয়েছেন কুমিল্লা জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর। এঘটনায় ব্রিকস ফিল্ডের ব্যবসায়ীর নিকট পাওনা টাকা না পাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে পাওনাদারসহ স্থানীয় এলাকাবাসীকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়।অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, এম.এম.আর ব্রিকসের মালিক মো. মজিবুর রহমান ২০১২ সালে এই ইট ভাটাটি তৈরি করে ব্যবসা শুরু করেন। প্রথম দিকে মজিবুর রহমান ইটভাটাটি দিয়ে কিছুটা আর্থিক সাফল্যের মুখ দেখলেও রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ততা ও নিজের খামখেয়ালিপনার কারণে ২০১৫ সালের মধ্যেই ক্ষতির দারপ্রান্তে গিয়ে দাড়ায় প্রতিষ্ঠানটি।একপর্যায় ঋণের বোঝা নিয়ে দেশ ত্যাগ করতে হয় প্রতিষ্ঠানের মালিক মজিবুর রহমানকে। পরবর্তীতে ইটভাটাটির কার্যক্রম এক বছর বন্ধ থাকার পর পূনরায় মজিবুর রহমানের স্ত্রী মো: হাসিয়া বেগম প্রতিষ্ঠান মালিকের এজেন্ট হয়ে ব্যবসায়ী সফিউল হোসেনকে ১০ বছরের জন্য বাৎসরিক চুক্তিতে ইটভাটাটি ভাড়া দেন।ভাড়া নেওয়ার পর থেকে সফিউল হোসেন প্রথম দুই-তিন বছর ঠিক মতো ইটভাটা পরিচালনা করে আসলেও এরপর থেকে শুরু করেন নানা রকমের প্রতারণা। মালিক পক্ষকে বাৎসরিক ভাড়া প্রদানে কালক্ষেপণ করা থেকে শুরু করে নানা অনিয়ম। এনিয়ে তিতাস থানায় একাধিকবার দুপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে বিচার সালিসির মাধ্যমে ইটভাটাটি চলছিল।এমন অবস্থায় ২০২৪ সালে ইটভাটার মালিক মুজিবুর রহমান প্রবাস থেকে দেশে ফিরে আসেন এবং ইটভাটার ভাড়াটিয়া সফিউল হোসেন এর বিরুদ্ধে চুক্তিনামার শর্ত ভঙ্গের অভিযোগে তিতাস থানায় এবং সরকারি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জমা দেন। এদিকে শফিউল হোসেনও মজিবুর গং এর বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি, মারধর এবং ভাটা পরিচালনায় বাধা প্রদানের অভিযোগ তুলে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দেন।এইসব ঘটনায় দুপক্ষকে নিয়ে থানায় একাধিকবার সামাজিক ভাবে বিচার সালিস বসলেও সমস্যাগুলো নিরসন না হলে দুপক্ষই বিভিন্ন অভিযোগে পাল্টা-পাল্টি আদালতে মামলা দায়ের করেন। এদিকে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ইটভাটার মালিক মুজিবুর রহমান ইটভাটাটি দখলে যান। দখলের সপ্তাহ ক্ষানিকের মধ্যেই উপজেলা প্রশাসন ইটভাটায় গিয়ে সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে নোটিশ টাঙ্গিয়ে দেয়।
এরই মধ্য দেশে গনঅভুথ্যান ঘটলে ইটভাটার মালিক মুজিবুর রহমান পূর্বে আ'লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকার সুযোগে প্রভাবশালী আ'লীগ নেতা ট্যাগ দিয়ে মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনসহ সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে বিভিন্ন রকমের লিখিত অভিযোগ জমা দেন শফিউল হোসেন। তবে স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, মজিবুর রহমান ঋণগ্রস্ত হয়ে ২০১৪ সালে বিদেশ চলে যান এবং ২০২৪ সালে দেশে আসেন৷ আওয়ামী লীগ করলেও তিনি ব্যবসার সমস্যার কারণে দলীয় কার্যক্রম পালন করেনি। স্থানীয়রা আরো জানান, সেনাবাহিনী শফিউল ইসলামের অভিযোগের পেক্ষিতে ব্রিকস ফিল্ডে যান এবং দু'পক্ষের কাছে ঘটনার বিষয়ে জানার পর তাদেরকে সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে উপস্থিত হতে বলেন দু'পক্ষ উপস্থিত হলে তাদের এ সমস্যাগুলো নিরসনে দুপক্ষের সম্মতিক্রমে বিভিন্ন শর্ত জুড়ে পূনরায় অঙ্গিকারনামার মাধ্যমে সফিউল হোসেনকে ইটভাটাটি বুঝিয়ে দেওয়া হয়৷অঙ্গিকারনামা থেকে জানা যায়, ব্যবসায়ী সফিউল হোসেন এই মর্মে মুচলেকা প্রদান করেন যে, মেসার্স মজিবুর রহমান ব্রিকস ফিল্ড (M.M.B) বকেয়া জমির ভাড়া ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার টাকা) করে ০৩ (তিন) বৎসরের মোট এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা এবং ২ বৎসরের ব্রিকফিল্ডের ভাড়া বাবদ পনের লাখ পঞ্চাশ হাজার সর্বমোট ১৭,০০,০০০/- (সতের লক্ষ টাকা) ৯০ দিনের মধ্যে পরিশোধ করবেন।এছাড়াও ব্যবসায়ী শফিউল হোসেন M.M.B ২০১৭ সাল হইতে ২০২৫ইং জুলাই পূর্বের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল, ট্যাক্স, লাইসেন্স নবায়ন বিল ৯০ দিনের মধ্যে পরিশোধ করবেন ও আগামী ০৩ (তিন) বছরের সরকারী পরিবেশ দপ্তরের ট্যাক্স পরিশোধ এবং বার্ষিক ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরের ব্রিকস ফিল্ডের ভাড়া ২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ২৬-২৭ অর্থ বৎসরের ভাড়া জুন ২০২৬ইং তারিখের মধ্যে পরিশোধ করে দিবেন বলে মুচলেকা দিয়ে অঙ্গিকারনামার ভিত্তিতে ইটভাটাটি পূনরায় বুঝে নেন। কিন্তু অঙ্গিকারনামা অনুযায়ী শর্ত পূরণের তিন মাস শেষ হয়ে প্রায় ৭ মাস হতে চললেও শফিউল হোসেন সরকারি বকেয়া ফিসহ অন্যান্য কোন বিলই পরিশোধ করেনি। ইটভাটাটি জোরপূর্বক দখলে রেখে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেন ইটভাটার মালিক পক্ষ। মালিক পক্ষের আরো অভিযোগ এসব বিষয়ে সফিউল হোসনের সাথে কথা বলতে গেলেই ইটভাটাটি দখলে রাখতে থানায় হামলার মিথ্যা অভিযোগ দেন।এবিষয়ে অভিযুক্ত ইটভাটার ভাড়াটিয়া শফিউল হোসেন দাবি করেন অঙ্গিকার অনুযায়ী মালিক পক্ষকে ৯০ দিনের মধ্যে ১৭ লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিল তিনি ভাড়া বাবদ ইটভাটার মালিক মুজিবুর রহমানকে ১৭ লাখ টাকা দিয়ে দিয়েছেন। কৃষি ব্যাংকের চেকের মাধ্যমে শেষবার সাড়ে ১১ লাখ টাকা দিয়েছেন বলে জানান। এ নিয়ে দুপক্ষের মাঝে বিতর্ক সৃষ্টি হলে মালিক পক্ষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানায় পুলিশের উপস্থিতিতে সামাজিক ভাবে দু'পক্ষকে নিয়ে সমস্যার নিরসনে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সালিসিতে বসলে শফিউল হোসেন যে মজিবুর রহমানকে চেকের মাধ্যমে টাকা দিয়েছেন তা প্রমান করতে দু'পক্ষের চারজন লোক সাথে নিয়ে উপরোক্ত অর্থ লেনদেন এর ব্যাংকের শাখায় গিয়ে টাকাটি ভাটা
প্রকাশক ও সম্পাদক :
মোঃ সাইফুল ইসলাম ফয়সাল
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত