নির্বাচনি কৌশলে বড় রদবদল, ঠাঁই পাননি রিজভী-রুমিনসহ প্রভাবশালী অনেকে।আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে বিএনপি। তবে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই তালিকায় দলের অনেক প্রভাবশালী ও জ্যেষ্ঠ নেতার নাম না থাকায় রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে শুরু করে মাঠ কাঁপানো বক্তা হিসেবে পরিচিত অনেক হেভিওয়েট নেতা এবার মনোনয়নবঞ্চিত হয়েছেন।বিএনপির প্রকাশিত তালিকা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমানের মতো শীর্ষ নেতারা এবার মনোনয়ন পাননি। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালামের নামও নেই তালিকায়।তালিকায় স্থান পাননি আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা এবং দুই যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল ও মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুর রশীদ ইয়াসিন ও যুগ্ম মহাসচিব হুমায়ুন কবীরও এবারের দৌড়ে পিছিয়ে পড়েছেন।বিএনপি এবার মনোনয়নের ক্ষেত্রে ‘এক পরিবার থেকে একাধিক প্রার্থী নয়’—এই কঠোর নীতি অনুসরণ করেছে। ফলে সিনিয়র নেতাদের পরিবারের অনেক সদস্য এবার বাদ পড়েছেন। এই তালিকায় রয়েছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ, মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস এবং ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর স্ত্রী ও সাবেক এমপি রুমানা মাহমুদ।চট্টগ্রামের প্রভাবশালী নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য আসলাম চৌধুরী এবং এস এম ফজলুল হকও এবারের মনোনয়ন পাননি। এছাড়া তালিকায় নাম নেই ভাইস চেয়ারম্যান (পদ স্থগিত) গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, ভোলা-৪ আসনের সাবেক এমপি নাজিম উদ্দীন আলম, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সহ-সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল এবং বিএফইউজে মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরীর।দলীয় সূত্র বলছে, মূলত তিনটি বিষয়কে মাথায় রেখে এবার প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে: ১. আসনভিত্তিক জোটগত সমঝোতা ও শরিকদের জন্য আসন ছেড়ে দেয়া। ২. তারুণ্যকে প্রাধান্য দিয়ে মাঠ পর্যায়ে সক্রিয় নতুন মুখ তুলে আনা। ৩. সাংগঠনিক কৌশল হিসেবে কিছু জ্যেষ্ঠ নেতাকে নির্বাচনি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কেন্দ্রে রাখা।রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপি এবার পরীক্ষিত ও অভিজ্ঞ নেতাদের বদলে মাঠের জনপ্রিয় ও তরুণ নেতাদের ওপর বেশি বাজি ধরছে। তবে বাদ পড়া হেভিওয়েট নেতাদের অনুসারীদের মধ্যে কিছুটা অসন্তোষ দেখা দিলেও, দলীয় সংহতি রক্ষায় হাইকমান্ড তাদের বিশেষ কোনো সাংগঠনিক দায়িত্ব দিতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে।