
কুমিল্লার খবর অনলাইন নিউজ ডেস্ক।।
দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর পর উন্মুক্ত মঞ্চে ভাষণ দিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মাঝে বিভিন্ন সমাবেশে বক্তৃতা করলেও সেগুলো ছিল ভার্চুয়ালি। কারণ রাজনৈতিক কারণে দীর্ঘ ১৭টি বছর তাকে থাকতে হয়েছে দেশের বাইরে। দীর্ঘ প্রবাস জীবন কাটিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দেশে প্রত্যাবর্তন করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ ছেলে তারেক রহমান।
এ উপলক্ষে আয়োজন করা হয় গণসংবর্ধনার। সেখানে একমাত্র বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন তিনি। দুপুরে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে তাকে বহনকারী বিমান। ১২টা ৩৫ মিনিটে বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে পূর্বাচল তিন শ’ ফিট এলাকায় সংবর্ধনাস্থলে পৌঁছাতে তার সময় লাগে তিন ঘণ্টারও বেশি। পরে বিকেল ৩টা ৫৭ মিনিটে বক্তৃতা শুরু করে শেষ করেন ৪টা ১৩ মিনিটে। ১৬ মিনিটের এ বক্তৃতায় তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ পরিচালনায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। জানান, আগামীর বাংলাদেশ নিয়ে তার একটি পরিকল্পনা রয়েছে।
এর আগে ২০০৫ সালে তিনি দেশব্যাপী দলীয় কর্মসূচি পালন করেছিলেন। তিনি বাবা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পথ অনুসরণ করেই গ্রাম-গঞ্জের পথে-প্রান্তে ঘুরে বেড়িয়েছেন। তিনি গ্রামাঞ্চলের কৃষক-মজুর-খেটে খাওয়া গরীব-দুঃখী মানুষের কাছে গিয়ে তাদের সুখ-দুঃখ সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীদের মাঝে সেতুবন্ধন তৈরি করতে তৃণমূল ইউনিয়ন প্রতিনিধি সম্মেলন করেছিলেন। সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব থাকাকালে ২০০৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন রাজশাহী বিভাগের ঠাকুরগাঁও জেলা থেকে তৃণমূল সম্মেলনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন শুরু করেন তারেক রহমান।
এরপর একে একে দেশের অন্যান্য জেলায়ও তৃণমূল সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করেন তিনি। তখন বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ করেছিলেন তিনি। কিন্তু ২০০৬ সালের অক্টোবরে বিএনপি সরকারের পতনের পর দেশে গঠিত হয় বহুল আলোচিত ওয়ান-ইলেভেন সরকার। সে বছরই (২০০৭ সালের ৭ মার্চ) বন্দী করা হয় তারেক রহমান, খালেদা জিয়াসহ অনেক নেতাকর্মীকে। বন্দী অবস্থায় তিনি মারাত্মক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে তখন দলের পক্ষে অভিযোগ করা হয়েছিল।
১৮ মাস কারাভোগের পর তিনি ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পেয়ে ১১ সেপ্টেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান। কিন্তু এরপর তিনি আর দেশে ফিরতে পারেননি। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তার দেশে ফেরার সুযোগ তৈরি হয়। কিন্তু তারপরও বিভিন্ন পরিস্থিতি সাপেক্ষে তার দেশে ফেরা বিলম্বিত হয়। অবশেষে আজ বৃহস্পতিবার দেশের মাটিতে পা রাখলেন তিনি।