
প্রেস বিজ্ঞপ্তি।।
কুমিল্লা জেলার জাঙ্গালিয়া এলাকায় ২৩ বীর এবং র্যাব-১১ (সিপিসি-২) এর যৌথ উদ্যোগে একটি সফল বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানটি ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ ভোর ০২০০ ঘটিকা থেকে ০৬০০ ঘটিকা পর্যন্ত পরিচালিত হয়।
প্রাপ্ত নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে প্রথমে অভিযুক্ত মোঃ নজমুল ইসলাম শামীম (পিতা: মরহুম আব্দুল হালিম) এর বাসভবনে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানের সময় তার বাসা থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ স্থানীয়ভাবে তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র, দেশি ও বিদেশি গোলাবারুদ এবং বিভিন্ন অপরাধমূলক সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে তার ব্যবহৃত গোপন আস্তানাগুলোতেও তল্লাশি চালানো হয়, তবে প্রাথমিক পর্যায়ে তাকে সেখানে পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে র্যাব-১১ (সিপিসি-২) কর্তৃক আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় জিপিএস ও লোকেশন ট্র্যাকিং পরিচালনা করা হয় এবং এর ফলশ্রুতিতে সন্দেহভাজন শামীমকে সফলভাবে আটক করা হয়।
সন্দেহভাজনের ঠিকানা:
স্থায়ী ঠিকানা: সাং- জাঙ্গালিয়া, উপজেলা/থানা- কুমিল্লা সদর দক্ষিণ, জেলা- কুমিল্লা, বাংলাদেশ।
স্থায়ী-১: গ্রাম- জাঙ্গালিয়া (২১ নং ওয়ার্ড), উপজেলা/থানা- কুমিল্লা সদর দক্ষিণ, জেলা- কুমিল্লা, বাংলাদেশ।
উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদ (বাসা থেকে):
ক। স্থানীয়ভাবে তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র / পাইপগান – ০৩টি।
খ। শটগান কার্তুজ – মোট ৬০ রাউন্ড
(১) ১২ বোর × ৭০ মিমি – ৪০ রাউন্ড।
(২) ১২ বোর × ৭৬ মিমি – ২০ রাউন্ড।
গ। মেশিনগান গোলাবারুদ – ১৮ রাউন্ড (৭.৬২×৫৪ মিমি, POF নির্মিত)।
ঘ। পিস্তল গোলাবারুদ – ০১ রাউন্ড (৭.৬২×২৫ মিমি, টোকারেভ: S&B নির্মিত)।
ঙ। রিভলভার/ এয়ারগান গোলাবারুদ – ০১ রাউন্ড।
চ। ছুরি, চাপাতি ও চাইনিজ কুড়াল – মোট ১০টি।
ছ। অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন – ০২টি।
জ। মানিব্যাগ, এটিএম কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও এনআইডি – মোট ০৮টি
প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, সন্দেহভাজন শামীম জাঙ্গালিয়া বাসস্ট্যান্ডের সহ-সভাপতি হিসেবে পরিচিত এবং তিনি পূর্বে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারী ছিলেন। এছাড়াও তিনি কুমিল্লা শহরের একজন চিহ্নিত বড় চাঁদাবাজ হিসেবে পরিচিত। ভয়ের কারণে অনেকেই প্রকাশ্যে তার বিরুদ্ধে বক্তব্য প্রদান করতে সাহস পান না, তবে একাধিক সূত্র থেকে তার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত তথ্য পাওয়ার পরই সেনাবাহিনী তার বাসায় অভিযান পরিচালনা করে।
PCPR অনুযায়ী প্রাপ্ত মামলা সংক্রান্ত তথ্য:
সন্দেহভাজন শামীমের বিরুদ্ধে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানা ও কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় মোট কমপক্ষে ৭টি মামলা বিদ্যমান, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—
ক। কোতোয়ালি মডেল থানা, এফআইআর নং-৪৬ (১৫ অক্টোবর ২০২৪), GR-৭৬৯; ধারা 15(3)/25D বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৪ তৎসহ পেনাল কোড ১৮৬০ এর বিভিন্ন ধারা।
খ। কোতোয়ালি মডেল থানা, এফআইআর নং-৩১ (২৭ আগস্ট ২০২৪), GR-৬৪৩; দাঙ্গা ও হত্যাচেষ্টা সংক্রান্ত ধারা।
কোতোয়ালি মডেল থানা, এফআইআর নং-২১ (২৩ আগস্ট ২০২৪), GR-৬৩৩; গুরুতর আঘাত ও হত্যাচেষ্টা সংক্রান্ত ধারা।
গ। কোতোয়ালি মডেল থানা, এফআইআর নং-১৭ (২০ আগস্ট ২০২৪), GR-৬২৯; সহিংসতা ও হত্যাচেষ্টা সংক্রান্ত ধারা।
ঘ। কোতোয়ালি মডেল থানা, এফআইআর নং-১৪ (০৪ জানুয়ারি ২০১৩); নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন।
চ। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানা, এফআইআর নং-৩৩/১০৭ (২৬ মার্চ ২০২০); চার্জশিট নং-৩৬, তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪।
ছ। কোতোয়ালি মডেল থানা, এফআইআর নং-২৭ (১০ অক্টোবর ২০২৪), GR-৭৫০; বিশেষ ক্ষমতা আইন ও পেনাল কোডের একাধিক ধারা।
প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন শেষে সন্দেহভাজনকে র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
উল্লেখ্য, এই অভিযানটি ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের আওতাধীন ৪৪ পদাতিক ব্রিগেডের অধিনায়কত্বে ২৩ বীর কর্তৃক পরিচালিত একটি অন্যতম উল্লেখযোগ্য ও সফল অভিযান, যা কুমিল্লা অঞ্চলে অবৈধ অস্ত্র ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম দমনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।