নিজস্ব প্রতিবেদক।।
কুমিল্লায় চলতি বছরের নয় মাসে খুন নারী ও শিশু নির্যাতন ধর্ষণ ডাকাতি ও ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন থানায় দায়ের করা মামলার পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে এই তথ্য।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার আহমেদ খান। জেলা পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী,গত নয় মাসে জেলায় ৭৬টি হত্যাকান্ড সংগঠিত হয়েছে। এছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতনের ৬৫ টি মামলা,ধর্ষণের ৫২টি মামলা,ডাকাতির ১৭ টি ঘটনা,ছিনতাইয়ের ২৯ টি মামলা এবং চুরির ১৬৩ কোটি ঘটনা ঘটেছে।পুলিশ জানায় হত্যা নারী ও শিশু নির্যাতন,মাদক,চুরি, চাঁদাবাজি, দ্রুত বিচার আইন ও দস্যুতার মামলার সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।তুলনামূলকভাবে কমেছে ধর্ষণ, অস্ত্র উদ্ধার ও চোরাচালান সংক্রান্ত মামলা।রাজনৈতিক সহিংসতার মামলাও এ সময় বেড়েছে। জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪২ টি রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ১ হাজার ২১৭ জন আসামি। এসব মামলার বেশিরভাগই জুলাই ও আগস্ট মাসের ঘটনায় দায়ের হয়েছে। বিশেষ অভিযানে ৫৭ অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় ৬০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া জেলায় সড়ক দুর্ঘটনাতেও প্রাণহানি উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে।এ সময়ের মধ্যে ১৭৯ জন নিহত হয়েছেন। শুধু জুলাই মাসে ২৫ জন মারা যান এবং ৭ জন আহত হন। এদিকে সাম্প্রতিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা সভায় জানানো হয়,যানবাহনের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। সর্বশেষ এক মাসে ২১১ টি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ৩৫৯টি মামলা করা হয়েছে,যার মাধ্যমে ২৪ লাখ ৮০ হাজার ৪৫০ টাকা জরিমানা আদায় হয়েছে।এ সময় কুমিল্লা নগরীর যানজট, জলাবদ্ধতা, ভাঙ্গাচোরা সড়ক,পলিথিনের ব্যবহার ও পরিবেশ দূষণ সহ নাগরিক সমস্যা নিয়েও আলোচনা করা হয়। জেলা প্রশাসক সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসক) রাশেদুল খান চৌধুরী বলেন" জেলায় পুলিশ প্রতিদিনেই অভিযান চালাচ্ছে। বিশেষ করে মাদকদ্রব্য উদ্ধারে এবং সড়কে যানজট কমাতে নিয়মিত চেকপোস্ট বসানো হচ্ছে। প্রতিটি থানাকে আরও সক্রিয় রাখা হয়েছে,যাতে অপরাধীরা কোথাও আশ্রয় নিতে না পারে। "পুলিশ সুপার নজির আহমেদ খান বলেন,অপরাধ দমন শুধু পুলিশের একার দায়িত্ব নয়, বরং সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুললেও অপরাধ কমানো সম্ভব। আমরা চাই কুমিল্লাকে একটি নিরাপদ ও শান্ত জেলায় পরিণত করতে সবার সহযোগিতা।জেলা প্রশাসক মোঃ আমিরুল কায়সার বলেন,জেলার সামগ্রিক নিরাপত্তা ও নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে প্রশাসন, পুলিশ ও অন্যান্য সরকারি দপ্তরের মধ্যে আরও ঘনিষ্ঠ সমন্বয় প্রয়োজন। আমরা চাই মানুষ যেন নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে জীবনযাপন করতে পারে। সবার আলোচিত প্রতিটি বিষয় দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ করা হয়েছে।