গাজী মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জাবির,বুড়িচং প্রতিনিধি।।
গুজব মানে কোনো বিষয়ে নিশ্চিত না হয়ে অনুমান নির্ভর কথা বলা। যা ইসলামে নিষেধ, না-জায়েজ এবং পাপ। তথ্যটি যদি গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর বিষয় হয় এবং ওই তথ্য বিশ্বাস করার কারণে বড় ধরনের সংঘাত ও হানাহানি ঘটে যাওয়ার আশংকা থাকে। কোরআনে আল্লাহ তায়ালা যেকোনো তথ্য প্রচার করার আগে যাচাই করে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে মুমিনগণ, যদি কোনো ফাসেক ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোনো সংবাদ নিয়ে আসে, তাহলে তোমরা তা যাচাই করে নাও। এ আশঙ্কায় যে, তোমরা অজ্ঞতাবশত কোনো দলকে আক্রমণ করে বসবে, ফলে তোমরা তোমাদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হবে।
(সুরা হুজুরাত: ৬)।
আরেক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, যে বিষয়ে তোমার জানা নেই, সে বিষয়ে অনুমান দ্বারা পরিচালিত হয়ো না। (সুরা ইসরা: ৩৬)।
গুজব বা অনুমান-নির্ভর কথা ছড়ানো মিথ্যা বলার মতোই বড় অপরাধ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, মানুষের মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা কিছু শোনে তা-ই (যাচাই করা ছাড়া) প্রচার করতে থাকে। (সহিহ মুসলিম: ৭)।
অন্যের ব্যক্তিগত বিষয়ে মন্দ ধারণাও পাপ:
কোরআনে অন্যের ব্যক্তিগত বিষয়ে মন্দ ধারণাকেও পাপ বলা হয়েছে। অন্যের পেছনে লেগে থাকা, দোষ খোঁজা, চর্চা করা আরও গুরুতর পাপ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে মুমিনগণ, তোমরা অধিক অনুমান থেকে দূরে থাক। নিশ্চয় কোনো কোনো অনুমান গুনাহের কাজ। আর তোমরা অন্যের দোষ খোঁজাখুঁজি করো এবং একে অপরের গিবত করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? তোমরা তো তা অপছন্দই করে থাক। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, অসীম দয়ালু। (সুরা হুজুরাত: ১২)। আমাদের সমাজে অনেকের মধ্যে যেমন অন্যের ব্যক্তিগত বিষয়ে অনুমান নির্ভর তথ্য প্রচার করার অভ্যাস আছে, অহেতুক কৌতূহল, দোষ খোঁজাখুঁজির অভ্যাস আছে, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর বিষয়েও অনেক সময় যখন গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়, তখন অনেকেই তা যাচাই না করেই ছড়িয়ে দিতে থাকে। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
গাজী মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জাবির, ধর্ম ও সমাজ বিশ্লেষক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান উপস্থাপক ও চেয়ারম্যান, গাউছিয়া ইসলামিক মিশন, কুমিল্লা।