ওসির স্বীকারোক্তিতে ফাঁস সদর দক্ষিণ থানার রফাদফা কেলেঙ্কারি
স্টাফ রিপোর্টার।।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় মাদকবিরোধী অভিযানের নামে চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। থানার এএসআই মাজেদুল ইসলাম ও দুই কনস্টেবল—সুজন মুন্সী ও শামীমুর রহমান—মাদকসহ দুইজনকে আটক করে ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে গোপনে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে, জানা গেছে, গত ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে সদর দক্ষিণ থানার সুয়া গাজী এলাকায় এএসআই মাজেদুল এবং দুই কনস্টেবল যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে দুই মাদক ব্যবসায়ী কামাল ও রুবেলকে ১৫ বোতল বিদেশি মদ ও ৩০ বোতল বিয়ারসহ আটক করেন।বিশ্বাসযোগ্য সূত্রে জানা যায়, ঘটনাস্থলেই ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে ‘রফাদফা’ করে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।এএসআই মাজেদুলের বক্তব্য বিষয়টি জানতে চাইলে এএসআই মাজেদুল প্রতিবেদককে জানান,> “ভাই, আমার তো বদলি হয়ে গেছে।”যখন প্রশ্ন করা হয়, “এই মাদক কেলেঙ্কারির কারণেই কি আপনার বদলি?”—তখন তিনি সংক্ষিপ্তভাবে বলেন,“না।"কনস্টেবলদের রহস্যজনক নীরবতা ঘটনার সঙ্গে জড়িত কনস্টেবল সুজন মুন্সী প্রথমে প্রতিবেদককে গোমরা করার চেষ্টা করেন। পরে বলেন,> “কবে, কখন, কোথায়—আমার মনে নেই ভাই। আপনি থানাতে এসে যোগাযোগ করেন।”
আরেক কনস্টেবল শামীমুর রহমান বলেন,
“আমার কিছুই মনে পড়ছে না।”ওসির স্বীকারোক্তি,সদর দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জের কাছে ঘটনাটি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিককে জানান,> “এই ঘটনার জন্যই এএসআই মাজেদুলকে বদলি করা হয়েছে।”ওসির এই বক্তব্যের পর পুরো ঘটনায় দুর্নীতির বিষয়টি অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সার্কেলের ভূমিকাঘটনা জানার পর সদর দক্ষিণ সার্কেল সাংবাদিককে আশ্বস্ত করে বলেন,> “আমি বিষয়টি জানি না, তবে জেনে আপনাকে জানাচ্ছি। খবর নিচ্ছি।”তবে পরে প্রতিবেদক তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।সাংবাদিক মহলের প্রতিক্রিয়া,কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা প্রশ্ন তুলেছেন,> “যদি এএসআই মাজেদুলকে বদলি করা হয়, তবে কনস্টেবল সুজন মুন্সী ও শামীমুর রহমানের কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হলো না কেন?”তাদের মতে, ওসি নিজেই যেহেতু স্বীকার করেছেন যে, মাজেদুলকে তার নির্দেশে বদলি করা হয়েছে, তাহলে তদন্তে ওসির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে সাংবাদিকরা আরও বলেন,> “১৫ বোতল বিদেশি মদ ও ৩০ বোতল বিয়ার এখন কোথায়? এগুলো থানার জব্দ তালিকায় আছে কি?”এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কুমিল্লা সাংবাদিক পরিষদ পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।মাদকবিরোধী অভিযানের নামে যদি পুলিশ সদস্যরাই রফাদফার মাধ্যমে আসামি ছাড়িয়ে দেন, তাহলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার মূল ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার এই ঘটনাটি এখন জেলা পুলিশের ভাবমূর্তিকে গভীরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।