নিজস্ব প্রতিবেদক।।
১৭ বছর ধরে ক্ষমতাসীন দলের বন্দনায় যারা অভ্যস্ত, তারা হঠাৎ করেই নিজেদের "বিভাগ বাস্তবায়ন কমিটির নেতা" হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন। অথচ ১৯৮৮ সাল থেকে যারা কুমিল্লা বিভাগ আন্দোলনের প্রকৃত পথিকৃৎ, তাদের নাম আজ কেউ উচ্চারণও করছে না। ইতিহাসের প্রতি এই অবহেলা শুধু দুঃখজনক নয়-এটি আমাদের গণতান্ত্রিক চর্চার জন্যও এক অশনি সংকেত।যদি জাতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণে কন্টেন্ট ক্রিয়েটররাই একমাত্র নিয়ামক হয়ে ওঠে, তাহলে সামনে আমাদের কপালে দুর্ভাগ্যই আছে। কারণ, এই দুই ব্যক্তি নিজেদের ভিউ ব্যবসা চাঙ্গা রাখতে উস্কানিমূলক বক্তব্য ছড়িয়ে দুই জেলার মধ্যে বিভাজনের দেয়াল তুলেছেন। প্রশ্ন জাগে-কিসের বিভাগ? সবার আগে তো দেশ। আমি ভালো থাকলে আমার পাশের জেলা ভালো থাকবে, আর আমরা সবাই ভালো থাকব। বিভাগ কাকে, কখন, কীভাবে দেওয়া হবে-এটা সরকারের সিদ্ধান্ত। কিন্তু নিজের ব্যবসা রক্ষা করতে পাকনা কথায় ভেজাল সৃষ্টি করা কি নৈতিক?কুমিল্লাবাসী জানে-যদি বিভাগ হয়, তবে কুমিল্লাই হবে। কুমিল্লার কোনো বিকল্প নেই। এই সত্যকে বিকৃত করে বিভ্রান্তি ছড়ানো মানে কুমিল্লার মর্যাদাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা।বিভাগ কুমিল্লা নামেই হবে-এই বাস্তবতা মাথায় রেখেই ইতোমধ্যে কুমিল্লায় স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কার্যালয়, প্রশাসনিক অবকাঠামো ও আঞ্চলিক অফিস। এটি কোনো কল্পনা নয়, এটি বাস্তব প্রস্তুতি। কিন্তু শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত অহংকার, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং কুমিল্লার কিছু সুবিধাবাদী নেতার নিষ্ক্রিয়তা ও দ্বিচারিতার কারণে বিভাগ ঘোষণার পথ বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এই বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে বলা জরুরি, যাতে বিভ্রান্তি না ছড়ায় এবং বিতর্ক প্রশমিত হয়।আরেকটা বিষয় গভীরভাবে ভাবার মতো-আমরা কতটা আত্মবিস্মৃত হলে বিভাগীয় দাবিতে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রায় স্লোগান দেই-"টিপু ভাইয়ের কুমিল্লা", "মিতু আপার কুমিল্লা"! তাঁরা কুমিল্লায় বসবাসরত সম্মানিত নাগরিক, স্থায়ী কুমিল্লাবাসী নন। এই শহরের আত্মা, ইতিহাস ও আন্দোলনের প্রতি এমন স্লোগান কি আমাদের সচেতনতার পরিচয় দেয়?