নিজস্ব প্রতিবেদক।।
স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের সাবেক কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, ও পলাতক সাবেক অএমপি বাহার কন্যা তাহসিন বাহার সূচনার আস্থাভাজন নারী নেত্রী সালমা আক্তার নূপুর আবারও আলোচনায়। সম্প্রতি কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভেতরে পুলিশ অফিসারদের টেবিলে বসে হাতে হ্যান্ডকাফ নিয়ে ছবি তোলেন তিনি। পরে ছবিটি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করলে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।স্থানীয়দের অভিযোগ সাধারণ মানুষের পক্ষে থানার ভেতরে প্রবেশ তো দূরের কথা, পুলিশের টেবিলে বসে হেন্ডকাপ হাতে ছবি তোলা কল্পনাতীত। অথচ নূপুর কোনো বাধা ছাড়াই এমন ছবি তুলেছেন এবং তা আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন। আর নূপুরকে এ কাজে সহযোগিতা করেন কথিত বৈষম্যবিরোধী নারী সমন্বয়ক জান্নাত। তাদের এই কর্মকান্ডের পরও কোতোয়ালি থানা পুলিশের নীরবতা এখন নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।স্থানীয় একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, কিছুদিন আগে সালমা আক্তার নূপুরের সাথে আরেক নারীর একটি বিষয় নিয়ে ঝামেলা হয়। তখন সালমা আক্তার নূপুর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কুমিল্লা জেলা কমিটির সংগঠক জান্নাত কে সাথে নিয়ে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় যায় ঐ নারীর বিষয়ে অভিযোগ দিতে। তখন নূপুর সমন্বয়ক জান্নাতের প্রভাব খাটিয়ে থানার ভিতর এ কাজটি করেন।একাধিক ব্যাক্তি নাম না বলার শর্তে বলেন, যে সালমা নূপুর বিগত সৈরাচার আওয়ামীলীগের মেয়র সূচীর আস্থাভাজন ছিলেন এবং সূচীর প্রভাব খাটিয়ে তখনকার সময় নানা অপকর্ম করেছেন তাকে কিভাবে বৈষম্যবিরোধী সংগঠনের নেত্রী জান্নাত প্রশয় দেয়?
শহরের সচেতন নাগরিকরা বলছেন, “যেখানে সাধারণ মানুষ থানায় ঢুকতে ভয় পায়, সেখানে রাজনৈতিক পরিচয়ে কেউ যদি পুলিশের টেবিলে বসে হেন্ডকাপ হাতে ছবি তোলে, তা পুলিশের নিরপেক্ষতার ওপর বড় প্রশ্ন তোলে।”ছবির বিষয়ে সালমা আক্তার নূপুরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ছবিটি মজা করে উঠিয়েছি এবং মজা করেই ফেইসবুকে পোস্ট করেছি।আপনার বিরুদ্ধে যদি এখন থানা থেকে কোন আইনি পদক্ষেপ নেয় সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে নূপুর বলেন আমি থানার ওসি এবং সেকেন্ড অফিসার কে মেনেজ করেছি। এবং আমার পোস্ট ডিলেট করে ফেলেছি। আপনি পারলে নিউজ করে দেন।এ বিষয়ে জানার জন্য জান্নাতকে একাধিক বার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। তার হোয়াস্টএপ নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক কে বলেন আমি আপনাকে চিনি না। তাই কোন কথা বলতে চাচ্ছি না। আমি সরাসরি আপনার সাথে দেখা করবো, এরপর আর কোন যোগাযোগ করেননি। বৈষম্যবিরোধী কুমিল্লা মহানগর শাখার আহ্বায়ক আবু রায়হান ও সদস্য সচিব রাশেদের বক্তব্য জানতে চাইলে তারা কোন বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন আগে সমন্বয়ক জান্নাত এক মহিলাকে সাথে করে নিয়ে আসে একটি অভিযোগ দেওয়ার জন্য।
আমি জানতাম না ঐ মহিলা আ.লীগের দোসর, সমন্বয়ক জান্নাত সাথে করে নিয়ে আসছে তাই আমি আমার সেকেন্ড অফিসার কুতুবুদ্দিন কে দায়িত্ব দেই। এরপর কি হয়েছে তা আমি জানিনা। আর ঐ নূপুর কিভাবে হেন্ডকাপ হাতে নিয়ে ছবি তোলেছে তাও আমি জানিনা।সেকেন্ড অফিসার কুতুবুদ্দিন বলেন, আমাদের এক অফিসার হেন্ডকাপটি টেবিলে রেখে ওয়াশ রুমে গিয়েছিলো হাত মুখ ধোয়ার জন্য। তখন এ নূপুর এ ছবিটি তোলে। কিন্তু সমন্বয়ক জান্নাত নূপুরকে সাথে করে এনেছে বিধায় আমরা নূপুরকে কিছু বলিনি।এ কাজটি থানার ভিতরে করা ঠিক হয়েছে কিনা? বা এরপর আপনারা কোন আইনিপদক্ষেপ নিয়েছেন কিনা প্রশ্ন করা হলে সেকেন্ড অফিসার কুতুবউদ্দিন কোন উত্তর না দিয়ে চুপ থাকেন।