কুমিল্লার তিতাসে হাত-পা বেঁধে রাজমিস্ত্রিকে হত্যার ঘটনায় ০২ জনকে গ্রেফতার

কুমিল্লার তিতাসে হাত-পা বেঁধে রাজমিস্ত্রিকে হত্যার ঘটনায় ০২ জনকে গ্রেফতার

প্রকাশিত: ১১:১২ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩, ২০২৫

কুমিল্লার তিতাসে হাত-পা বেঁধে রাজমিস্ত্রিকে হত্যার ঘটনায় ০২ জনকে গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক।।
গত ২৮/০৬/২০২৫ ইং তারিখ দিবাগত রাতে কুমিল্লা জেলার তিতাস থানাধীন পূর্ব ভাটিপাড়া সাকিনস্থ জনৈক ব্যক্তির নির্মানাধীন বিল্ডিংয়ে রাজমিস্ত্রি মোস্তফা (৫৫), পিতা-মৃত বাহারাম আলী, সাং-ছোট কল্যানী, থানা-মাহিগঞ্জ, জেলা-রংপুর হাত-পা বাধা অবস্থায় নির্মমভাবে খুন হয়। খুনের ঘটনায় ভিকটিমের স্ত্রী বাদী হয়ে কুমিল্লা জেলার তিতাস থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং- ২২, তারিখ-৩০/০৬/২০২৫ ইং, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০। উক্ত খুনের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বেশ আলোচনার সৃষ্টি করে। আলোচিত এই খুনের ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
গোয়েন্দা নজরদারী, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা ও প্রাপ্ত গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ০২/০৭/২০২৫ ইং তারিখে র‌্যাব-১১ ও র‌্যাব-৬ এর যৌথ আভিযানিক দল বাগেরহাট জেলার মংলা থানাধীন মোংলা ইপিজেড এলাকা হতে উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত প্রধান ০২ আসামী ১। মোঃ মোস্তাকিম হোসেন @নাইম (২০), পিতা-গোলাম মোর্তুজা, সাং-ধাইনগর এবং ২। আহমাদুল্লাহ ওরফে বাবু (রিফাত) (২১), পিতা-নওশাদ আলী, সাং-বামনগ্রাম, উভয় থানা-শিবগঞ্জ, জেলা-চাপাইনবাবগঞ্জ’দ্বয়কে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকালে আসামীদ্বয়ের নিকট হতে ০২ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিকটিম মোস্তফা (৫৫) পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি হওয়ায় নিজ এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সে কন্ট্রাকে কাজ করতো। এরই প্রেক্ষিতে গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়ের সাথে তার পরিচয় হয়। কুমিল্লা জেলার তিতাস থানাধীন মঙ্গলকান্দি গ্রামের একটি বিল্ডিংয়ে নির্মাণ কাজ করার সময় তার কাজ দেখে খুশি হয়ে পাশের গ্রামের জনৈক ব্যক্তি তার বিল্ডিংয়ের কাজ ভিকটিমকে কন্ট্রাকে দেয়। ইতোমধ্যে গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়কে ভিকটিম কাজে নিয়োগ দিলে তারা গত ২১/০৬/২০২৫ ইং তারিখে কাজ করার উদ্দেশ্যে ভিকটিমের কাছে যায় এবং নিয়মিত কাজ করতে থাকে। আসামীদ্বয়কে জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায় যে, গত ২৮/০৬/২০২৫ ইং তারিখ কাজ শেষে পাওনা টাকা নিয়ে ভিকটিমের সাথে তাদের কথা কাটা-কাটি ও বাগ-বিতন্ডা শুরু হয়। কথা কাটা-কাটির এক পর্যায়ে তারা ভিকটিমের উপর চড়াও হয়ে তার হাত-পা বেঁধে ফেলে ছোট রড দিয়ে তার বাম চোখে সজোরে খোঁচা দেয়, যার ফলে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে ভিকটিম নিস্তেজ হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে আসামীদ্বয় গামছা দিয়ে ভিকটিমের চোখ-মুখ বেঁধে ফেলে এবং তার চোখ-মুখের উপর দিয়ে লাল রংয়ের স্কচটেপ পেঁচিয়ে নির্মমভাবে পাশবিক নির্যাতন করে। নির্যাতনের এক পর্যায়ে ভিকটিম অচেতন হয়ে পড়লে তারা উক্ত স্থান ত্যাগ করে দ্রুত পালিয়ে যায় এবং বাগেরহাট জেলার মোংলা থানায় গিয়ে আত্নগোপন করে। গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়কে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিকভাবে তারা উভয়েই উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে কুমিল্লা জেলার তিতাস থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।